Type Here to Get Search Results !

Most Viewed

শুধু রাউটার রিস্টার্ট করার মাধ্যমে কেন অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়?



আমাদের ভেতর যাদের ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ রয়েছে, তাদের জন্য এই আর্টিকেলটি হয়ত কাজের হতে চলেছে। আমরা এই ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগে ৮০% শতাংশই ওয়্যালেস ওয়াইফাই রাউটার তথা মডেম ব্যবহার করে থাকি। এখান থেকে আমাদের বিভিন্ন ওয়াইফাই এনাবলড ডিভাইসে সংযোগ নিয়ে রাখি আবার কম্পিউটারের সাথে সচরাচর ল্যান পোর্টের সাথে তার দিয়ে সংযোগ নিয়ে থাকি।
অনেকসময় কোন কারনে ইন্টারনেটের সমস্যা দেখা দিলে, আমরা ডিভাইসের ওয়াইফাই সংযোগ বন্ধ করে দেই, অথবা রাউটারটি হয়ত কিছুক্ষন এর জন্য অফ করে রাখি। এতে করে কিছু মূহুর্ত পরে সংযোগটি আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়। তবে কেন, রাউটার রিস্টার্ট নিলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়? আজ এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব আজকের আর্টিকেলে।

Source: Tp-Link
রাউটারের কাজ
প্রথমে জেনে রাখা ভালো, সেটা হলো প্রত্যেকটি রাউটার একেকটি ছোট কম্পিউটারের মত। রাউটারেও প্রোসেসর থাকে, থাকে ডাটা ম্যানেজ করার জন্য মেমোরী।সম্পূর্ণ সিস্টেম পরিচালনার জন্য রাউটারে থাকে বিশেষায়িত অপারেটিং সিস্টেম। শাওমি, আসুস এর হাই-এন্ড রাউটারে আমরা দেখতে পারব, সেখানে প্রোসেসর তথা চিপসেট মডেল ইত্যাদি মেনশন তথা উল্লেখ্য করা থাকে।
নেটওয়ার্কের অধীনে সবগুলো কানেক্টেড ডিভাইসের ডাটা প্রোসেস ও ট্রান্সফার করার জন্য রাউটারের হার্ডওয়্যার এর ভূমিকা কম্পিউটারের মতই। ঠিক যেমনটি করে থাকে বড় বড় ব্যান্ডউইথ সার্ভার। সুতরাং রাউটার এর কাজ সহজ মনে হলেও এটি কিন্তু মোটেও কোনো সাধারন, সহজ-সরল ডিভাইস নয়। এর কার্যকলাপ কিন্তু খুবই কমপ্লেক্স ।

Source: Tp-Link
আমরা ইন্টারনেটে ব্যবহারের জন্য যেসব রাউটার ব্যবহার করি, তার ভেতর সচরাচর দুই রকমের রাউটার দেখা যায়। একটা হল DSL/ADSL রাউটার। বাংলাদেশে যারা BTCL এর ইন্টারনেট তথা ব্রডব্যান্ড ব্যবহার করছেন বা করেছিলেন তারা এসব DSL মডেম বা রাউটার ব্যবহার করেছেন। DSL রাউটার গুলো হল, মডেম +রাউটার কম্বো। বিটিসিএল এর ইন্টারনেট সংযোগটি সাধারনত হয় অ্যানালগ,আর এসব DSL রাউটার এর ভেতরকার মডেম এসব অ্যানালগ সিংনালকে ডিজিটালে পরিনত করে, আর ভেতরে থাকা রাউটার তা ওয়্যারলেস ফেডালিটি তথা ওয়্যারলেস রেডিও সিংনাল ওয়াইফাই এর মাধ্যমে বিভিন্ন ডিভাইসে ইন্টারনেট ছড়িয়ে দেয়।

Source: Tp-Link
এক্ষেত্রে DSL রাউটার প্রথমত নেটওয়ার্কের সিংনাল মডিউলেশন আবার ডি-মডিউনেশন করছে, কানেক্টেড ডিভাইসগুলোর ডাটা নেটওয়ার্ক এর মধ্য দিয়ে সঠিকভাবে পারাপার করে দিচ্ছে, তারবিহীন নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করছে, জিবির পর জিবি ডাটা প্রোসেস, আপ-ডাউন করছে। সেক্ষেত্রে টেলিফোনের সমান ছোট রাউটারটির উপর কত ঝড় বয়ে যাচ্ছে, একটু চিন্তা করে দেখুন।

Source: Tp-Link
DSL রাউটার ব্যাতিত আরেকটি যে রাউটার যা আমরা এলাকার বা শহরের লোকাল আইএসপি এর থেকে নিয়ে ব্যবহার করি তা হল সাধারন ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস  রাউটার। এখানে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগগুলো সাধারনত ডিজিটাল সিংনাল হয়, রাউটারের আলাদা করে তা আর DSL রাউটারের মত অ্যানালগ থেকে ডিজিটালে রূপান্তর করতে হয় না। এখানে সাধারন ব্রডব্যান্ড ওয়্যারলেস রাউটার কেবল ইন্টারনেটটিকে ওয়্যারলেস ফেডালিটি তথা ওয়াইফাই এর মাধ্যমে তারহীন ইন্টারনেট সংযোগে পরিনত করে। আর কম্পিউটারে ল্যান পোর্ট এর মধ্য দিয়ে ইন্টারনেট বন্টন করে।  একারনে ডিএসএল রাউটারের সমস্য ব্রডব্যান্ড রাউটারের থেকে বেশি।
মূল টপিক

Source: Tp-Link
এতক্ষন রাউটার কি কাজ করে, মূলত কোন দুই প্রকারের রাউটার বেশি বেশি মানুষ ব্যবহার করে তা দেখলাম। এখন আসল টপিকে আসি। ইন্টারনেটের সংযোগে সমস্যা হলে, রাউটার রিস্টার্ট দিলে কেন সমস্যা মিটে যায়? কেন? প্রথমত, DSL বা ADSL রাউটারের ক্ষেত্রে সমস্যাটি অনেকসময় বেশি হয়। কারন এসব রাউটার ডাটা অ্যানালগ-ডিজিটাল রূপান্তর, ইন্টারনেট কম্পিউটার এর মাঝে ছড়িয়ে দেয়া এবং পাশাপাশি তা তারহীন সিংনালে পরিনত করে, ডিভাইসগুলোর ডাটা প্রোসেস করে। তারওপর আমরা বেশিরভাগ এসব রাউটার বন্ধ করি না দিনের পর দিন হয়ত চালু রাখি। প্রতিনিয়ত রাউটারটি এসব কাজ করার ফলে, এর ভেতর ভারসাম্য অনেক সময় ঠিক থাকে না। এতে করে ইন্টারনেটের সমস্যা সৃষ্টি হয়। আর এইসময় আমরা যখন রাউটারটিকে রিস্টার্ট করি, তখন তা আবার আগের মত নতুন ভাবে কাজ শুরু, পুরাতন চাপ আর থাকে না। এতে করে রিস্টার্ট এর মাধ্যমে সমস্যা মিটে যায়। আমি যখন গক বছর আগে বিটিসিএল এর এডিএসএল ইন্টারনেট সংযোগ ব্যবহার করতাম তখন ২৪ ঘন্টাই রাউটার চালু রাখতাম, আর এতে করে রাউটার সচল এবং পূর্নাঙ্গ কার্যশীল রাখার জন্য আমাকে দিনে অন্তত ২ বার একে রিস্টার্ট দিতে হত।
যাই হোক, এডিএসএল বা ডিএসএল সবাই ব্যবহার করে না। বেশিরভাগই ব্যবহার করেন ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। তাদের অনেকসময় ইন্টারনেটের একটু সমস্যা হলে রাউটার রিস্টার্ট দিলে সমস্যা মিটে যায়। এখানে অনেকগুলো কারন বিদ্যমান থাকে।
বেশিরভাগ আইএসপি বা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারেরা টেম্পোরারি বা সাময়িক আইপি অ্যাড্রেস ব্যবহার করে থাকে। ধরে নিন আপনার বাসার সামনে দিয়ে রাস্তায় সবাই যাতায়াত করে, তারভেতর আপনিও একজন। এখানে পাবলিক রাস্তাটি হল আইএসপি এর দেয়া টেম্পোরারি আইপি এড্রেস আর আপনার রাউটার হল সেই রাস্তার পথচারী। এখানে আরো নেটওয়ার্কের ভেতর দিয়ে ডাটা পারাপার করতে রাউটারের সমস্যা হয়। আবার আপনার রাউটারে যদি আইএসপি এর থেকে নেয়া ডেডিকেটেড আইপি এড্রেস থাকে, তবে হয়ত আপনার রাউটারের খাটনি একটু কমবে। ভিআইপি রাস্তায় একাই যাতায়াতেরর মজা বলতে যা। তবে সাধারন টেম্পোরারি আইপি তে থাকলে এতগুলো আইপির ভেতর রাউটারের অনেক সময় নেটওয়ার্কে ঢুকতে সমস্যায় পড়তে হয়, আর এতে করে এখানে একবার রাউটার রিস্টার্ট দিলে আবার আইপি ঠিক হয়ে যায়।
সবরকম ইন্টারনেট রাউটারের ক্ষেত্রে যখন ১০ টার উপরে ডিভাইস কানেক্টেড থাকে, তখন দেখা যায় যে রাউটারের ডাটা ডাউনলোড লিমিট একেবারে উত্তীর্ন হয়ে যায়, রাউটারের অনবোর্ড স্টোরেজটি এত রিকুয়েস্ট হ্যান্ডেল করতে পারে না। আর ঠিক এই সময় একটি রিস্টার্ট রাউটারের সাময়িক সমস্যা থেকে পরিত্রান দিয়ে, রাউটার টিকে নতুন উদ্দোমে উদ্দীপ্ত করতে পারে।

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.